স্বদেশ ডেস্ক:
কুমিল্লার দেবিদ্বারে ইউপি সদস্য ছেলে ওমর ফারুক সরকারের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণ, মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন বৃদ্ধ ফরিদ উদ্দিন সরকার। বলেছেন, ছেলের নির্যাতনে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এখন হুমকিতে বাড়ি ছাড়া তিনি ও তার স্ত্রী। আরও অভিযোগ তার, থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও নানা অজুহাতে মামলা রেকর্ড করেনি।
উল্টো মামলা নিয়েছে অভিযুক্ত ছেলের দায়ের করাটি। দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ ইউনিয়নের এলাহাবাদ গ্রামের ফরিদ উদ্দিন সরকার গত শনিবার এই অভিযোগ করেন ছেলের বিরুদ্ধে। তিনি পুলিশ সুপারের মানবিক হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। অপরদিকে অভিযুক্ত ওমর ফারুক সরকার বলেছেন, আমার বাবা দুই বিয়ে করেন। আমিসহ দুই ভাই তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান। আমাদের দুই ভাইকে অর্থ-সম্পদ থেকে বঞ্চিত করে তিনি সৎমা ও সন্তানদের নিয়ে আছেন। সম্পদের অধিকার চাওয়ায় আমার ওপর হামলা হয়েছে। তাই মামলা করেছি। বাবাকে মারধর ও হুমকির অভিযোগ সঠিক নয়।
আর দেবিদ্বার থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান বলেন, ‘জায়গা-সম্পত্তির বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। ফারুক মেম্বার এলাকায় মানববন্ধন করেছে। তাকে মারধরের ডাক্তারি সনদ আছে, তাই মামলা নিয়েছি। তার বাবা ফরিদ উদ্দিন একটি অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন। তাকে বলেছি, ডাক্তারি সনদ নিয়ে এলে মামলা নেওয়া হবে।
ফরিদ উদ্দিন সরকার কান্না কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলে ওমর ফারুক সরকার মেম্বার হওয়ার পর থেকে নানা কাজকর্মে বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। সে মেম্বার হওয়ায় দাপট খাটিয়ে পরিবারের সবার সম্পত্তি গ্রাস করতে চায়। পারিবারিক বিষয় নিয়ে ফারুক ও তার স্ত্রী আমাকে একাধিকবার মারধর করেছে। ফারুক স্থানীয় সমাজপতিদেরও পাত্তা দেয় না। গত ৩১ মার্চ ফারুক আমাকে বেধড়ক মারধর করে আলমারি ভেঙে টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, দলিলপত্র নিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিরুপায় হয়ে তার বিরুদ্ধে গত ১ এপ্রিল আদালতে মামলা করি। বিষয়টি জানার পর ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১২ এপ্রিল দুপুরে ফারুক ও তার স্ত্রী ছেনি ও লাঠি নিয়ে ঘরে ঢুকে আমাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। এ সময় আমাদের ডাক-চিৎকারে পাশর্^বর্তী বাড়ির কলেজশিক্ষক আক্তার হোসেন সরকার ওরফে সেলিম ও আমার আরেক ছেলে এসে আমাকে প্রাণে বাঁচায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় আমাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে জেনেছি, ওমর ফারুক গত ১৪ এপ্রিল নিরপরাধ শিক্ষক আক্তার হোসেনকে প্রধান আসামি করে আমার এক ছেলেসহ কয়েকজনের নামে থানায় মামলা দিয়েছে। সরেজমিন তদন্ত না করে রহস্যজনক কারণে পুলিশ সরাসরি মামলা রেকর্ড করেছে। কিন্তু আমাকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আমি থানায় গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি।